Wellcome to National Portal
Main Comtent Skiped

পল্লী মাতৃকেন্দ্র

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, যাদের অধিকাংশই পল্লী অঞ্চলে বসবাসকারী সুবিধাবঞ্চিত। ১৯৭৫ সনে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সরকার কর্তৃক গ্রামীন দরিদ্র মহিলাদেরকে সংগঠিত করে তাদের জীবনের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে পল্লী মাতৃকেন্দ্র (RMC) শীর্ষক প্রকল্প প্রবর্তন করা হয়। সামাজিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে তৎকালীন ১৯ জেলার ১৯ থানায় সমাজসেবা অধিদফতরের আওতায় মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচি হিসেবে বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেক্টরের আওতায় পল্লী এলাকার নারীদের ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে এ কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নারীদের দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে এ কর্মসূচির ভূমিকা খুবই ফলপ্রসূ। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় এবং জিওবি অর্থে মোট ৬ টি পর্বে (১৯৭৫ হতে ২০০৪ খ্রী: পর্যন্ত) দেশের ৬৪ জেলার ৩১৪ উপজেলায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে অবশিষ্ট ১৭৮ উপজেলায় এ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং বর্তমানে ৬৪ জেলার সকল উপজেলায়  পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রমে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে অনগ্রসর, বঞ্চিত, দরিদ্র ও সমস্যাগ্রস্ত নারীদের সংগঠিত করে পরিবার ভিত্তিক দরিদ্রতা হ্রাস করা  হচ্ছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ের গ্রাম এলাকার লক্ষ্যভুক্ত নিম্ন আয়ের অনগ্রসর দরিদ্র নারীদের সংগঠিত করে তাদের নিজস্ব পুঁজি গঠন করা হয়। শুধুমাত্র জন্মদানে সক্ষম নারীদের অংশগ্রহণে পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।পল্লী মাতৃকেন্দ্রের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামের দরিদ্র নারীদের ছোট পরিবার গঠনের উপকারিতা, বয়স্ক শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, মা ও শিশুযত্ন সম্পর্কে অবহিত এবং উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান, সঞ্চয় সৃষ্টি ও অর্থকরী লাভজনক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা। প্রতিজন সদস্যকে ৩০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করা হয়। ১০% সার্ভিস চার্জসহ সমান ১০টি কিস্তিতে সর্বোচ্চ ১ বছর মেয়াদে এ ঋণ পরিশোধযোগ্য। 

 

২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের বাজেটে ‘পল্লী মাতৃকেন্দ্র (আরএমসি) কার্যক্রম’ খাতে ২২.০০ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছে। উক্ত অর্থের মধ্যে ১ম ও ২য় কিস্তি বাবদ ১১.০০ কোটি টাকার বিভাজন মাঠ পর্যায়ে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

সেবা:

 

  • দরিদ্র নারীদের সংগঠিত করে উন্নয়নের মূল স্রো্তধারায় নিয়ে আসা;
  • দরিদ্রতা বিমোচন ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন;
  • পরিকল্পিত পরিবার তৈরীতে সহায়তা প্রদান;
  • জাতীয় জনসংখ্যা কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট সেবা;
  • সচেতনতামূলক উদ্বুদ্ধকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন;
  • ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণ;
  • লক্ষ্যভুক্ত নারীদের সংগঠনের নিজস্ব পুঁজি গঠন।

 

সেবা গ্রহীতা:

 

  • নির্বাচিত গ্রামের বাসিন্দা
  • পল্লী মাতৃকেন্দ্র কর্মদলের দলীয় সদস্য
  • মাথাপিছু পারিবারিক আয় ৩৪০০ টাকা

 

কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টগণ:

 

সমাজসেবা অধিদফতরের কার্যক্রম শাখা এ কার্যক্রম দু’টি বাস্তবায়ন করে থাকে। পরিচালক (কার্যক্রম) এর নেতৃত্বে একজন অতিরিক্ত পরিচালক, একজন উপ-পরিচালক, ২ জন সহকারী পরিচালক, ১ জন হিসাব রক্ষক, ১ জন সমাজসেবা অফিসার সদর দপ্তর পর্যায়ে এবং মাঠপর্যায়ে ৪৮১ জন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট। জেলা পর্যায়ের ৬৪টি জন উপ-পরিচালক ও ২২ জন সহকারী পরিচালক মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম তদারকি এবং মাঠ পর্যায় ও সদর দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে থাকেন। মাঠ পর্যায়ে উপজেলার কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি কার্যক্রম বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটির যথাক্রমে সদস্য-সচিব ও সভাপতি হিসেবে কাজ করেন।

 

সেবাদান কেন্দ্র:

 

  • ৩১৮টি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়।

 

কার্যাবলি:

 

  • গ্রাম নির্বাচন;
  • গ্রাম জরিপ;
  • লক্ষ্যভুক্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সংগঠিত করে দলগঠন;
  • গ্রাম/মহল্লা কমিটি গঠন;
  • সাক্ষর জ্ঞান প্রদান;
  • বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ;
  • পরিবার পরিকল্পনা, বাড়ীর আঙ্গিনায় সব্জিচাষ, সামাজিক বনায়ন, নিরাপদ পানি পান, স্যানিটেশন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পুষ্টি সচেতনতা, পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভবতী মায়ের যত্ন, শিশুদের টিকা দান, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, নারী নির্যাতন ও যৌতুক বিরোধী সচেতনতা, মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার রোধ, শিশুদের স্কুলে প্রেরণ ইত্যাদি
  • বৃত্তিমূলক ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান;
  • ক্ষুদ্রঋণ প্রাপ্তির জন্য নির্ধারিত আবেদন পত্রে আবেদন;
  • আর্থ সামজিক উন্নয়নে উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচন;
  • চুক্তি সম্পাদন;
  • সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান;
  • নিজস্ব পুঁজিসহ সংগঠন তৈরীতে সহযোগিতা।

 

নাগরিকগণের সহযোগিতার ক্ষেত্র:

 

  • সুবিধাভোগী কর্তৃক ঋণ প্রাপ্তির পর ২য় মাস হতে সমান ১০ কিস্তিতে অথবা স্কীম ভেদে ১, ২ বা ৩ কিস্তিতে ঋণের অর্থ শতকরা ১০ ভাগ সার্ভিসচার্জসহ ফেরত দেয়া;
  • দলীয় সদস্য কর্তৃক নিয়মিত নির্ধারিত হারে সঞ্চয় করা;
  • কার্যক্রমের মাধ্যমে সদস্যদের যে সকল বিষয়ে সচেতন করা হয় তা মেনে চলা;
  • কোন সুবিধাভোগী প্রাপ্ত ঋণের অর্থ নিয়মমত পরিশোধ না করলে তা আদায়ে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা;
  • সঠিক গ্রাম/মহল্লা ও উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচনে কর্তৃপক্ষকে তথ্য সরবরাহ ও সহযোগিতা;
  • ঋণ প্রদানে কোন অসচ্ছতা পরিলক্ষিত হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট অবহিত করা।

 

সেবা প্রদানের সময়সীমা:

  • গ্রাম/মহল্লা নির্বাচনের পর ১ম বার ঋণ প্রদান ১ মাস;
  • পুনবিনিয়োগ/২য়/৩য় পর্যায়ের ঋণ প্রদান, আবেদনের পর ২০ দিন।